কামরুল হাসান:
হঠাৎ করে ছোট বেলার একটি জনপ্রিয় আঞ্চলিক গানের কথা মনে পড়ে গেল। ‘রংপুর যাইয়্যা দেখি, রঙের মেলা/বাক্স খুইল্যা দেখি, দুধ আর কলা/ বিনি পয়সায় মজা মারলো, ওই পাড়ার ছেরারা।’ মনে হয় ছোট-বড় অনেকেই এ গানটি শুনে থাকবেন। ওসব থাক, এখন মূল কথায় আসি। রঙের এ দুনিয়ায়, রঙ ছাড়া আর কিছু নাই। চারিদিকে শুধু রঙময়তা। যে দিকে তাকাই না কেন- সে দিকে শুধুই রঙ আর রঙ। শপিংমলে গেলে দেখবেন কত্ত রঙের বাহার। ডিজিটাল শপিংমলে গেলেতো গোলকধাধায় পড়ে যাবেন। একেকটি আইটেমেরই বাহারি বিভিন্ন মডেলের নানান ফ্যাশনেবল জিনিস পাবেন। রাস্তায় বের হলেই দেখবেন, নানান রঙের পোষাক পরা ভিন্ন বয়সীদের ডিজিটাল কায়দায় রঙ-ঢঙ। চুলে রঙ, কপালে রঙ, চোখে রঙ, ঠোঁটে রঙ, কানে রঙ, নাকে রঙ, গলায় রঙ এক কথায় হাত-পাসহ সারা দেহেই রঙ। দেহের রঙের সাথে কিন্তু মনের রঙেরও একটা যোগ আছে। কারন- ‘দেহ আর মন বহে সমান্তরাল।’ যার মনে রঙ কম, তার দেহে নিরস প্রাণ। যার মনে যত রঙ, তার দেহে তত রস। তিনি শুধু সরস প্রানের অধিকারীই নয়, বরং সৌর্যবিত্তেও উঁচুতে। মনের রঙের চাহিদার আসক্তে দেহের রঙের চাহিদাও মেটে। সেটা আবার অদেখা এক রিলে সিস্টেমে। তাইতো দোকানে বাহারি রঙের মুখরোচক খাবার দেখলেই রসনা বাপু কেঁদে-মেগে অস্থির। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগায়, সু-চতুর বেপারি বেটারা। আমরা হদ্দ হাদা বোকার দলে যারা, ধার-দেনা করে হলেও কিনে নিই। তারপর মনের সুখে ‘আইলাম আর গেলাম, গেলাম আর আইলাম ভবে/খাইলাম দাইলাম কিছুই বুঝলাম না’ গান গাইতে গাইতে বাড়ি ফিরি। এ গানের কথায় আরেকটি গান মনে পড়ে গেল। যেমন-‘এই দুনিয়া কানার হাট বাজার।’ তাই আমরা দেখেও দেখিনা। এ রমজান মাসে সারা দিন পাকস্থলীটা শুকনা থাকে। অথচ সন্ধ্যার পর নানান রঙ ও রাসায়নিক মেশানো উপকরনে তৈরি আর ভেজাল তেলে ভাজা সব শুকনা খাবারটাই না খাই। ডাক্তার সাবরা বলুনতো, আমরা গবেট বাঙালিরা আসলে কোন পথে যাচ্ছি। শুধু ডাক্তার সাবদের কাছেই প্রশ্ন করে লাভ কি? তবে সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহ দেখভালের জন্য যারা দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন, দয়া করে তারা একটু নিজেদের খেমতাটা দেখান। নতুবা, এলানজারি করেদেন- সব ঠিক হ্যায়! তাহলে অন্তত আমরা জ¦ী হুজুর! জী হুজুর!! বলতে বলতে মরে গিয়েও শান্তি পাবো। সুতরাং, বুঝে নেব যে- সবাই একজোট হ্যায়! (লেখক: কামরুল হাসান, ডিরেক্টর-বাংলাদেশ সেন্ট্রাল প্রেসক্লাব, ঢাকা এবং সাংবাদিক, ফিচার ও কলাম লেখক)
কামরুল হাসান
০১৯১৪-৭৩৫৮৪২