কামরুল হাসান :

জামালপুর সদর উপজেলার দিগপাইত ইউনিয়নের মোহনপুর খুপিবাড়ি গ্রামের ভয়ঙ্কর আ’লীগ
নেতা আখতারুজ্জামান আখতার আতঙ্কে সাধারন মানুষ অতিষ্ঠ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তিনি দিগপাইত ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন আওয়ামী
লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে থেকে ‘মুই কি হনু’ বনে যান। পলাতক আওয়ামী দুঃশাসন নৈরাজ্যের শাসনামলে
ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে সাধারণ মানুষদের জিম্মি করে রেখেছিলেন তিনি। এবং নিরীহ লোকদের কাছ থেকে চাঁদা
আদায়, জমি দখল ও নিয়োগ বানিজ্যসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িতও ছিলেন। এমনকি গ্রাম্য শালিশ বৈঠকেও
ছিল তার একক আতিপত্য। মামলা-মোকাদ্দমার তদবির-সুপারিশের জন্য তিনি থানা ও ফাড়ির প্রধান দালালে
পরিনত হন। তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি পদে থাকায় তার ছত্রছায়ায় ভয়ঙ্কর এক বিশাল
বাহিনী গড়ে তুলেন। তার ও ভয়ঙ্কর ওই বিশাল বাহিনীর দাপটে ইউনিয়নের গণতন্ত্রমনা জনগণ সব সময় আতঙ্ক
নিয়ে চলতো। জাতীয়তাবাদী দল তথা অন্যান্য দলের লোকজনের উপর তার নিজস্ব বাহিনী কর্তৃক হামলা-মামলা ও
জুলুম-নির্যাতনসহ নানা অবিচারিক শাসন ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে একক আধিপত্য বিস্তার
করেছিলেন। অবশ্য এর পেছনে রয়েছেন তার বড় ভাই জামালপুর সদর আসনের সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার
মোজাফ্ফর হোসেন। এই আ’লীগ নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে তার মদদে বর্তমানে নিসিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ,
সন্ত্রাসী সংগঠন যুবলীগ ও গুম-খুনের সংগঠন আওয়ামীলীগ উজ্জীবিত হওয়ার জন্য এখনো ভেতরে ভেতরে সঙ্গবদ্ধ
হচ্ছে। এই আওয়ামী নেতা আখতারুজ্জামান স্থানীয় মোহনপুর খুপিবাড়ি এলাকাসহ দিগপাইত ইউনিয়নের বিএনপি
পরিবারের লোকদেরকে দফায় দফায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির মাধ্যমে জেলও খাটিয়েছেন। এমনকি বিএনপি
পরিবারের লোকদেরকে বাড়ি-ঘর ছাড়া করে রেখেছিলেন। উল্লেখ্য, গত ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের
সময় তার নেতৃত্বেখুপিবাড়ি কেন্দ্রে আওয়ামীলীগের নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর ও অগ্নি সংযোগ করে বিএনপি নেতা￾কর্মীদের নামে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়েছিলেন। এছাড়া তার বিরুদ্ধে ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয়
সংসদ নির্বাচনে খুপিবাড়ি কেন্দ্রসহ অন্যান্য ভোটকেন্দ্র দখল করে প্রকাশ্যে সীল মারার অভিযোগ রয়েছে। শুধু তাই
নয়, প্রচার রয়েছে যে, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগের এমপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার মোঃমাজাফফর হোসেন নিজ ভোট কেন্দ্রে(খুপিবাড়ি) নিজের ভোটই দিতে পারেন নি। কারন-তিনি এসে দেখেন তার
ভোটও আগেই সীল মেরে নেয়া হয়েছে। এসব ছাড়াও ওই সময়ে জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার ছবি
ভাংচুরসহ অগ্নিসংযোগ করেছিলেন ওই আ’লীগ নেতা আখতারুজ্জামান। তিনি এতই প্রভাবশালী যে এখনো
প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছেন। প্রতিদিন মোহনপুর খুপিবাড়ি মোড়ে বসে থেকে এখনো নিয়মিত আওয়ামী
আওয়ামী জপ করছেনই। ওই আ’লীগ নেতা আখতারুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়োগের নামে
লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। তন্মধ্যে দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজে হবদেশ গ্রামের
এক ব্যক্তিকে দপ্তরী পদে চাকুরী দিয়ে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এছাড়াও ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে
গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ প্রকল্পে ঘর দেওয়ার নাম করে সেখান থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এমনকি
তার বিরুদ্ধে টিআর-কাবিখা-কাবিটা থেকেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ক্ষেত্রে অবশ্য
তার বড় ভাই মোজাফ্ফর হোসেন এমপি’র পিএস সাইফুল ইসলাম রাহাত ‘ভাই আর ভাই, আধা-আধি খাই’ নীতি
অনুসারে অনেকটাই সহযোগিতা করেছেন। এ বিষয়ে আখতারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগের জন্য তার ব্যক্তিগত
মোবাইল ফোনে বার-বার চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি। এ সমস্ত অপকর্মের জন্য দিগপাইত ইউনিয়নবাসী
এখন তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে বদ্ধপরিকর। সাধারণ জনগন তার সকল অন্যায় -অত্যাচারের জবাব
চান। দিতে অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে সুষ্ঠ তদন্ত সাপেক্ষে তাকে আইনের আওতায় আনা হোক। প্রশাসন ও আইন
শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট এমন দাবি ইউনিয়নবাসীর।