কামরুল হাসান:
জামালপুর সদরের সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মহির উদ্দিন তালুকদার আগামী ৩০ জানুয়ারী, ২০২৫ খিস্টাব্দে অবসরে যাচ্ছেন। হিসেব অনুসারে তিনি ৫ বছর ৪ মাস ২৯ দিন এ প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব পালনের পরই অবসর গ্রহন করবেন। আর এ পেশায় তিনি মোট ৩৩ বছর ১ মাস ২০ দিন কর্ম দায়িত্ব পালন করবেন।
১৯৬৫ সালের ৩১ জানুয়ারী তিনি জামালপুর সদরের মেস্টা ইউনিয়নের পারপাড়া গ্রামের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন। বাবা ডাঃ মোঃ আঃ রহমান ও মা মোছাঃ মমেনা খাতুন। বাবা পেশায় তিনি একজন হোমিও চিকিৎসক ও মা একজন আদর্শ গৃহিনী হলেও পরিবারটি ছিল শিক্ষাবান্ধব। তাই তিনি প্রাথমিক থেকে উচ্চতর শিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন। এমনকি তিনি শৈশব থেকেই শিক্ষকতার মতো মহান পেশায় কাজ করার স্বপ্ন দেখতেন। বিশেষকরে তিনি একজন আদর্শ শিক্ষক হতে চেয়েছিলেন। একদিন সে সুযোগও এসে যায় তার। তাই শিক্ষা জীবন শেষ হওয়া মাত্রই তিনি তার পছন্দের পেশায় যোগ দেন।
১৯৭৫ সালে তিনি জামালপুরের. সরিষাবাড়ী উপজেলার ভাটারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। ১৯৮১ সালে ভাটারা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বাণিজ্য বিভাগে (বাণিজ্যিক গণিতে লেটারসহ) প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা শেষ করেন। অতঃপর তিনি ১৯৮৩ সালে সরিষাবাড়ী কলেজ থেকে বাণিজ্য বিভাগে (হিসাব বিজ্ঞানে লেটারসহ) দ্বিতীয় বিভাগে উত্তীর্ণ হয়ে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পেরোন। পরে তিনি ১৯৮৩-১৯৮৪ শিক্ষা বর্ষে প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ^-বিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৮৬ সালে দ্বিতীয় শ্রেণীতে দ্বিতীয়তে ¯œাতক (সম্মান) হন। সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে একই প্রতিষ্ঠান থেকে একই বিষয়ে দ্বিতীয় শ্রেণীতে দ্বিতীয় হয়ে ¯œাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৯১ সালের ১০ ডিসেম্বর তিনি জামালপুরের ইসলামপুর কলেজে মার্কেটিং বিষয়ের প্রভাষক হিসেবে প্রথম শিক্ষকতা পেশায় যোগদান করেন। ২০০৮ সালের ২১ মার্চ সহকারী অধ্যাপক হিসেবে এ কর্মস্হল ত্যাগ করেন। পরে তিনি ওই বছরের ২২ মার্চ ময়মনসিংহের ঈশ^রগঞ্জ গার্লস স্কুল এন্ড কলেজে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯১৯ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সেখানে সুনামের সহিত দায়িত্ব পালন করেন। অতঃপর এ মানুষ গড়ার কারিগরটি ২০১৯ সালের ১ জুলাই জামালপুর সদরের সুনামধন্য বিদ্যাপীঠ দিগপাইত শামছুল হক ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ পদে যোগদান করেন। সরকারী বিধি মোতাবেক তিনি আগামী ৩০ জানুয়ারী, ২০২৫ খিস্টাব্দে অবসরে যাবেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যা সন্তানের জনক। বড় মেয়ে বাবার আদর্শে অনুপ্রাণিত বলেই শিক্ষকতা নামক মহান পেশায় নিযোজিত রয়েছেন। ছোট মেয়ে এসএসসি-তে এপ্লাস গ্রেড পেয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। আর স্ত্রী সেলিনা খানম জামালপুর সদরের মেস্টার আবদুল হামিদ খান স্কুল এন্ড কলেজে সহ-শিক্ষক হিসেবে কর্মরত।