কামরুল হাসান
জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিয়ারা গ্রামের মৃত রহিজ উদ্দিন মোল্লার ছোট ছেলে হাবিবুর রহমান ও তার বড় ভাই মৃত তৈয়ব আলীর মেয়ে পারুলের কারনে সামাজিক শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। সামাজিক শান্তি বিনষ্টের জন্য তাদের বিভিন্ন অপপ্রচার ও অপতৎপরতাই দায়ী। কেবলমাত্র তাদের কারনে সমাজের শান্তি বিনষ্ট হবে, এমনটা মেনে নিতে নারাজ সমাজবাসী।
জানা যায়, জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের বিয়ারা গ্রামের মৃত নহেজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে মৃত আব্দুস সামাদ মোল্লা তার দুই দাদীর ওয়ারিশগনের নিকট হতে মোট ২ একর ২৫ শতাংশ জমি কিনে। কিন্তু সামাদ মোল্লার ছোট দাদা রহিজ উদ্দিন মোল্লা কৌশলে ১৯৮২ সালের বিআরএস রেকর্ডে কিনে নেয়া জমির সঠিক অংশ বা হিস্যা ধরে দেয় নাই। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে আব্দুস সামাদ মোল্লা ও তার ওয়ারিশগণ ওই জমির সঠিক হিস্যার জন্য জোরালো দাবী তুলে। এ কারনে রহিজ মোল্লার দুই ছেলে তৈয়ব আলী ও হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে ২০০৬ সালে সদর সিনিয়র জর্জ আদালতে ৫৪/০৬ নং (বাটুয়ারা) মামলা দায়ের করে। বিবাদী পক্ষের আব্দুস সামাদ মোল্লা এ মামলাটির মোকাবেলা করে। অবশ্য সাক্ষ্য- প্রমানের অভাব ও গরহাজিরার কারনে ০১-১২-২০১৯ তারিখে ওই মামলাটি খারিজ করে দেয় বিজ্ঞ আদালত। ইতোমধ্যে ২০১৫ সালে বিআরএস রেকর্ড সংশোধনের জন্য আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণ (১ক-১ছ) বাদী হয়ে এলএসটি আদালতে ৩৫৫৬/১৫ নং মামলা দায়ের করে। বিগত ২৮-০৮-২০২৩ তারিখে বিয়ারা মৌজার কিনে নেয়া ২ একর ২৫ শতাংশ জমি থেকে হিস্যামতে ৬৬.৫ (সাড়ে ছেষট্টি) শতাংশ জমির মালিকানার বিষয়ে বাদী পক্ষে রায় হয়। অতঃপর ৩১-০৮-২০২৩ তারিখে ওই রায়ের ডিক্রিজারি হয়। আদালতের রায় ও ডিক্রিপ্রাপ্ত হয়ে আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণ তাদের জমি চাষাবাদের জন্য চলতি বছরের ১ জানুয়ারী পূর্ণ দখল নেয়। এতে হাবিবুর রহমান গং প্রতিপক্ষের দখলীয় ওই জমি জবর দখল নিতে ওঠে-পড়ে লাগে। এ বছরেরই ৩ জানুয়ারী হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণের বিরুদ্ধে এডিএম আদালতে ১৪৪/১৪৫ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। কিন্তু ওই মামলায় উল্লেখিত জমি অন্যের খতিয়ানভুক্ত হওয়ায় তা প্রত্যাহার করতঃ ১৫ জানুয়ারীতে পুনঃরায় ১৫/২৪ নং মামলা দায়ের করে। এ মামলাতেও বিবাদী পক্ষের ১২২ নং দাগের একক মালিকানাধীন ৪৮ শতাংশ জমিতে ২৪ শতাংশ জমি তার হিস্যায় ধরে। পক্ষান্তরে ১২১ ও ১৫৩ নং দাগে তার বৈধ মালিকানার কোন হিস্যাই ধরেনি। এছাড়া তার লোকজন দ্বারা বিবাদী পক্ষের ১২১ নং দাগের ৫ (পাঁচ) শতাংশ জমির সীমানা খুঁটি তুলে ও আল ভেঙ্গে ফেলে। ইতোপূর্বে এ সকল কর্মকান্ডের জন্য হাবিবুর রহমান গং-এর বিরুদ্ধে ১০৭ ধারায় অভিযোগ দায়ের করেন আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণের পক্ষে আক্তারুজ্জামান। এ প্রেক্ষিতে হাবিবুর রহমান গং আর কোনো সময় আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণের সাথে এমন কান্ড ঘটাবে না ঘটালে দায়ী থাকবে মর্মে মুচলেকাও দিয়েছে। অথচ তারা অহরহই এমন কান্ড ঘটিয়ে চলছে। ওদিকে দখলীয় জমির বিষয়ে সরেজমিন প্রতিবেদন দাখিলে আদালতের নির্দেশ পান শাহবাজপুর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মজিবর রহমান। তিনি ২৪ জানুয়ারী সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক প্রতিবেদন দাখিল করেন। ১ মার্চ বাদীর বোনের নাতিনরা বিবাদী পক্ষের পুরুষদের অনুপস্থিতিতে বাড়ীতে ঢুকে মহিলাদের গালাগালিসহ নানা হুমকি দিয়ে যায়। আদালতের ধার্য্য দিন ২০ মার্চে বাদী এই মর্মে ওই প্রতিবেদনের না রাজি দেয় যে, তদন্ত কর্মকর্তা সরেজমিনে না এসেই অফিসে বসে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন । পরে আদালত পুনঃপ্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় তাকে। ওই কর্মকর্তা ফের সরেজমিনে এসে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন তৈরী করেন। উল্লেখ্য, এতে হাবিবুরের খাস চামচা শহিদুর রহমান চান মিয়া ও খলিলুর রহমান আকন্দ তদন্ত কর্মকর্তার সহকারী অফিস সহায়ক মামুন মিয়া তদন্তকাজে প্রভাবিত বা হস্তক্ষেপ করেন। যেমন-১৪৯ নং দাগে অযাচিতভাবে ৫ (পাঁচ) শতাংশ জমি বাদী পক্ষের দখলে আর সাকুল্য জমি বিবাদী পক্ষের দখলে রয়েছে। অর্থাৎ ওই দাগে বাদী পক্ষের কোন জমিই নেই। ১২৯ নং দাগে সাড়ে চার শতাংশের স্থলে ১০ (দশ) শতাংশ জমি বাদী পক্ষের দখলে রয়েছে। অবশিষ্ট সাকুল্য জমি বিবাদী পক্ষের দখলে রয়েছে। অর্থাৎ সাড়ে পাঁচ শতাংশ জমি বাদী পক্ষে বেশী দখল দেখানো হয়েছে। এতে প্রতিপক্ষের স্বার্থে কোন কু-প্রভাব পড়বেনা বরং সু-প্রভাবই পড়বে বিধায় প্রতিবাদ করে নি। আদালতের পরের ধার্য্য দিনে দাখিলকৃত পুনঃপ্রতিবেদন পর্যালোচনান্তে বিজ্ঞ আদালত ওই মামলাটির অভিযোগ মিথ্যা উল্লেখ করে তা খারিজ করে দেয়। এমতাবস্থায় হাবিবুর রহমান গং প্রতিপক্ষের ভোগদখলীয় জমিতে রোপন করা বিভিন্ন ফসল ও গাছ-পালার ক্ষতিসাধনসহ নানা প্রকার অপতৎপরতা ও অব্যাহত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি হাবিবুর রহমান ও পারুলের বিভিন্ন অপপ্রচার ও অপতৎপরতার কারনে সামাজিক শান্তি বিনষ্ট হচ্ছে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীগণ অর্থাৎ আব্দুস সামাদ মোল্লার ওয়ারিশগণ প্রশাসন ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সু-দৃষ্টি কামনা করছে।
কামরুল হাসান
০১৯১৪-৭৩৫৮৪২
২০ডিসেমাবর, ২০২৪ ইং।