নিজ গ্রামের পাঙ্গাইসা বিলে নীরিহ অসহায় কৃষকদের আবাদী জমি জবর-দখল ও জোরপূর্বক কম দামে জমি দলিল করে বিলের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা বন্ধ করে শত একর জমির ভিতর গড়ে তুলেছেন একটি মৎস্য খামার। মূলত শত শত কোটি কালো টাকা সাদা করার অভিলাষ নিয়েই ওই মৎস্য খামারটি গড়ে তুলেছেন তিনি।
জানা যায়, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক তথ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানের (ভাতিজার) ক্ষমতা অপব্যবহার করে সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার নিপু মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার ও নিপুর ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার দিপু বাংলাদেশ হাইকোর্ট আইনজীবী সমিতির নেতা হয়ে দুই ভাই মিলে সারাদেশে অদৃশ্য এক ত্রাসের রাজত্ব গড়ে তুলে হাতিয়ে নিয়েছেন হাজার কোটি টাকা। সিদ্দিকুর রহমান তালুকদার নিপু সামান্য প্রফেসর থেকে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের রেজিস্ট্রার পদে অদৃশ্য ক্ষমতার বলে বহাল তবিয়তে থাকলেও সাম্প্রতিক তার ছোট ভাই মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার দিপু একটি মামলায় কারাগারে রয়েছেন। অভিযোগ রয়েছে, মোস্তাফিজুর রহমান তালুকদার দিপু দৌলতপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদের ক্ষমতা অপব্যবহার করে একজন মহিলা আয়া নিয়োগ দিয়ে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কথা বলে ওই মহিলার স্বামীর কাছ থেকে ২০ শতাংশ জমি তার পিতা আব্দুল ওয়াদুদ তালুকদার ফাউন্ডেসনের নামে রেজিঃ করেছেন। সাম্প্রতিক ওই বিদ্যালয়ে একজন কম্পিউটার অপারেটর ও একজন অফিস সহকারী পদে নিয়োগ দিয়ে ২৫ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। গুঞ্জন রয়েছে, নীরিহ অসহায় গরীব কয়কটি পরিবারের বাড়ী-ঘরের জায়গা জমি বেদখল দিয়ে বিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন নির্মান করা হয়েছে। এতে করে ওই পরিবারগুলো ঘর-বাড়ী হারিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছে। অভিযোগে আরো জানা গেছে, দৌলতপুর গ্রামে বসবাসকারী একমাত্র সংখ্যালঘু পরিবারটিকে ওই গ্রাম থেকে উচ্ছেদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছে নিপু ও দিপু তালুকদার গংরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা জানান, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসানের ক্ষমতা অপব্যবহার করে দুই ভাই মিলে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে নীরিহ অসহায় অনেক মানুষের জায়গা-জমি বেদখলসহ জোরপূর্বক অনেকের জায়গা-জমি কম দামে নিজেদের নামে রেজিঃ করে নিয়েছে। তারা আরো জানান, নিপু তালুকদার ক্ষমতার অপব্যবহার করে তার ছেলেকে পাইলটের চাকুরীও নিয়ে দিয়েছেন।
সরিষাবাড়ী উপজেলা বিএনপি’র প্রভাবশালী এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে অভিযোগ করে বলেন- নিপু ও দিপু তালুকদার আওয়ামী লীগ সরকারের ক্ষমতা অপব্যবহার করে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে। এটা ওপেন সির্ক্রেট। অথচ এ বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রহস্যজনক নীরব ভূমিকা পালন করছে। আমরা এই নীরবতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। সেইসাথে তিনি নিপু ও দিপু তালুকদারের আয়ের উৎস ও সম্পদের সঠিক তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবীও জানান।