জামালপুর প্রতিনিধি
জামালপুর সদর উপজেলার নান্দিনার অদূরে মহেশপুর কালিবাড়ী বাজারে হিন্দু সম্প্রদায়ের একটি মন্দিরে পাঁচটি মূর্তি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার ১৫ নভেম্বর সকালে জামালপুরের পুলিশ সুপারসহ পুলিশ প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জাকিরুল ইসলাম বাবুল মহেশপুর কালিবাড়ী বাজারে অবস্থিত মন্দিরের বাঁশের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করে একে একে পাঁচটি মুর্তি ভাংচুর করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় এলাকাবাসী জড়ো হয়ে ওই ব্যক্তিকে বটি ও ধারালো চাকুসহ হাতেনাতে আটক করে জামালপুর সদর থানা পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। আটক ব্যক্তির নাম জাকিরুল বাবুল (৩৫)। তার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার বাঁশচড়া ইউনিয়নের কাঁসারুপাড়া গ্রামে। সে ওই গ্রামের জয়দর আলীর ছেলে।
মহেশপুর কালিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা চাঁন মিয়া জানান, আটক বাবুল প্রকাশ্য দিবালোকে মন্দিরের মূর্তি ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আমরা তাকে ধারালো অস্ত্রসহ আটক করে পুলিশে দিয়েছি।
এদিকে ঘটনার সংবাদ পেয়ে ছুটে যান রানাগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নওয়াব হোসেন জুয়েলসহ দলীয় লোকজন। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান। ওকই সাথে দোষীর কঠোর শাস্তি দাবি করেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য রমজান আলী জানান, ঘটনাটি খুবই ন্যাক্কারজনক। ওই মন্দিরের পাঁচটি মূর্তি ভাংচুর করা হয়েছে। আমরা এর কঠোর শাস্তি দাবি করছি। এদিকে মূর্তি ভাংচুর করায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। তারা গ্রেফতারকৃত জাকিরুল বাবুলের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
এদিকে শুক্রবার সকালা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে নিয়ে ঘটনাটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন জামালপুরের পুলিশ সুপার সৈয়দ রফিকুল ইসলাম পিপিএম।
পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত জাকিরুল বাবুল মন্দিরে ঢুকে দেশি অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে মূর্তিগুলো ভাঙচুর করে। এ সময় মহেশপুর কালিবাড়ী বাজারের লোকজন তাকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। বৃহস্পতিবারই তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, যে কোনো ধর্মীয় অনুভূতিতে বিন্দুমাত্র আঘাত বা ষড়যন্ত্রের চেষ্টা করা হলে তাদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে আমরা ৭ দিনের রিমান্ড চাইবো। আমরা আশা করছি তার কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাব। এ সময় মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জীবন চন্দ্র বর্মণসহ মন্দির ও বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।