সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি:
নওগাঁর সাপাহার জোর পূর্বক দখল করে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ সহ আরো সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল চেষ্টা এবং মারপিট সহ প্রাণনাশের হুমিকর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার পাহাড়ীপুকুর এলাকায়। এঘটনায় সাপাহার থানায় ৪ জনকে বিবাদী করে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ওই গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মোঃ মোখলেছুর রহমান।
অভিযোগে উল্লেখিত অভিযুক্তরা হলেন, মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মোঃ মামুনুর রহমান (৩৫), মোঃ মামুনুর রহমানের স্ত্রী মোসাঃ রিমা খাতুন (২৮), মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মোঃ আমিনুল হক (৪১) ও মোঃ আমিনুল হকের স্ত্রী মোসাঃ মরিয়ম খাতুন (৩৫) অভিযুক্তদের সকলের বাড়ী উপজেলার পাহাড়ী পুকুর গ্রামে।
লিখিত অভিয়োগ সূত্রে এবং অভিযোগকারী মোখলেছুর রহমানের সাথে কথা বলে জানা যায়, অভিযোগে উল্লেখিত বিবাদীগণ উন্ন প্রকৃতির লোক এবং ১ নং, ৩ নং বিবাদীগণ আমার আপন ছোট ভাই, ২নং ও ৪নং বিবাদী তাদের স্ত্রী। আমি বগুড়াস্থ সরকারী শাহ্ সুলতান কলেজে কর্মরত থাকার সুবাদে বগুড়ায় অবস্থান করি। ১নং ও ২ নং বিবাদীগণ বহু দিন থেকে আমার আরেক ছোট ভাই মোঃ মমিনুল ইসলাম(৩৫), ও তার স্ত্রী মোসাঃ সালমা খাতুন (২৮) কে বিভিন্ন ভাবে অশ্রাব্য ও অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধোর এর হুমকি দিয়ে আসতেছে। এতকিছুর পরও আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে তাহাদেরকে ধৈর্য ধারন করতে বলায় তারা বিবাদীগণের সাথে কোন রকম বাক-বিতণ্ডায় জড়িত হয়নি। ঘটনার দিন গত বুধবার ২৩ অক্টোবর আনুমানিক সকাল সাড়ে ১০ টায় দিকে মোঃ মোখলেছুর রহমানের নির্দেশে তাঁর নিজস্ব সম্পত্তিতে মোখলেছুর রহমানের ছোট ভাই মমিনুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী তারের বেড়া দিতে যায়। এই অবস্থায় ৩ নং বিবাদী তাহাদেরকে বাধা প্রদান করে এবং ৪ নং বিবাদী অশ্রাব্য অশ্লিল ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে ১ নং বিবাদীকে সাথে নিয়ে ২ নং বিবাদী, মমিনুল এর উপর হামলা করে তার মাথায় ইট দিয়ে একাধিক জায়গায় আঘাত করে, মুখে অসংখ্য কিল, ঘুষি মেরে মাটিতে ফেলে দিয়ে বুকে লাথি মারে এবং তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হাটু দিয়ে তার বুকের উপর চেপে ধরে দুই হাত দিয়ে গলা চেপে ধরে। মমিনুল আত্মরক্ষার্থে উক্ত বিবাদীর পায়ে কামড় দিলে বিবাদীগণ তাকে ছেড়ে দেয়। অন্য দিকে মমিনুলকে বাঁচাতে তার স্ত্রী এগিয়ে আসলে ৪ নং বিবাদী তাকেও মারধর করে। পরে গ্রামবাসি তাদের উদ্ধার করে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভর্তি করে এবং বর্তমানে তারা সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছে।
মোখলেছুর রহমান আরো বলেন, ইতি পূর্বে ১ নং বিবাদী ও ২ নং বিবাদী এর প্ররোচনায় বিগত ১৫ সেপ্টম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৬.১৫ টার দিকে ‘০১৩১৯-২৯০৯৪৮’ নম্বর থেকে বগুড়া জেলার গাবতলী উপজেলার মোঃ আশিক রহমান ১ নং বিবাদীর ছোট ভাইরা পরিচয় দিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের বড় নেতা দাবী করে বাদীকে হোয়াটসঅ্যাপে কল দিয়ে অশালিন ভাষায় গালিগালাজ করে এবং হত্যার হুমকি দেয় ( যার অডিও কল রেকর্ড থানায় দেওয়া হয়েছে)। আবারো একই দিন রাত ৯ টা ০৫ মিনিটে ‘০১৭৩৯-৬২৭৮৯১’ নম্বর থেকে ১ নং বিবাদীর মামা শশুর পরিচয়ে একরামুল (ট্রকলার নেম) নামক একজন ব্যাক্তি জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল থেকে বাদীকে ফোনে ১৫ মিনিট যাবত অশ্রাব্য ও কুরুচীপূর্ণ ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বাদীর পূর্বের কর্মস্থল বগুড়ায় আজিজুল হক কলেজে (১১ মাস আগে কর্মরত থাকা অবস্থায়) এসে বাদীকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয় এবং হত্যা ও শেষ করে ফেলার হুমকি দেয় (যার অডিও কল রেকর্ডও থানায় দেওয়া হয়েছে) এবং আমার বিরুদ্ধে ফেলসানি (নারী নির্যাতন) মামলা দিয়ে আমার চাকুরী খেয়ে নেওয়ারও হুমকি দেয়। পরবর্তীতে হুমকি দাতা ১ নং বিবাদী আমার এবং আমার ছোট ভাই মমিনুলের একাধীক সম্পত্তি জোর পূর্বক দখল করে অস্থায়ী স্থাপনা নির্মাণ করেছে। এমনকি ঘটনার দিন বুধবার ২৩ অক্টোবর ঘটনাস্থলে আমার সম্পত্তিতে মাটি ফেলে জোর পূর্বক দখল করার চেষ্টা করে। উক্ত বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ওইদিন সাপাহার থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন উপজেলার পাহাড়ী পুকুর গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে মোঃ মোখলেছুর রহমান।
এবিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মালেক বলেন, একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।