মোঃরিমন চৌধুরী,নীলফামারী প্রতিনিধিঃ
২০১২ সালে ৫ ডিসেম্বর জেলার ডোমারে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রিয় কর্মসুচীর অংশ হিসেবে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদসভা ভন্ডুল অফিসে হামলা,লুটপাট ও ছাত্র শিবিরের অফিসে লুটপাট, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ১২ বছর পর মামলা করেছে জামায়াতে ইসলামী। মামলায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আসামী করে যে মামলা করেছে তাতে মৃত ও সরকারী চাকুরীজিবিদেরও নাম এসেছে।
সেপ্টেম্বর মাসে নীলফামারী আদালতে দায়ের করা এই মামলার ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ২০০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়। আদালত মামলাটি এফআইআর করার জন্য ডোমার থানাকে নির্দেশ দেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, দিনাজপুরের চিরির বন্দর ‘শিবির কর্মী মুজাহিদুল ইসলামকে হত্যার প্রতিবাদে কেন্দ্রিয় কর্মসূচী ঘোষিত বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ কর্মসূচী থাকলে কর্মসূচী করতে বাধা দেয় তৎকালীন পুলিশ। পুলিশের বাধায় সমাবেশ পন্ড হয়ে জামায়াত নেতাকর্মীরা নিজ নিজ বাড়ীতে চলে যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বাজার সংলগ্ন জামায়াতের অফিসে গিয়ে নেতাকর্মীদের মারধর করে তারা অফিস ভাংচুর ও অফিসের ভিতরের মালামাল লুটকরেন। এই সময় পুলিশের সহযোগীতা চেয়ে উল্টো জাময়াতকর্মীদের গ্রেফতার করে পুলিশ। অফিস ভাংচুরের পর আওয়ামী লীগ কর্মীরা ষ্টেশন সড়কের অবস্থিত শিবিরের অফিস ভাংচুর,লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করেন।
এ ঘটনায় সেই সময় জামায়াত মামলা করার আবেদন করলেও থানা সেই মামলা গ্রহন করেনি।
জামায়াতের মামলায় মৃত ব্যক্তিকে আসামী,অরাজনৈতিক ব্যক্তিদের নাম থাকায় জনমনে নানা প্রশ্ন রয়েছে। মামলার ৭৩ নম্বর আসামী হিসেবে নাম রয়েছে দুলাল হক সরকারের। তিনি গত ৫ জানুয়ারী মারা যান। সাবেক স্বাস্থ্য পরিদর্শক মোঃ বেলাল উদ্দিনকে মামলায় ৩৬ নম্বর আসামী করা হয়েছে।বেলাল উদ্দিন জানান,এক বছর আগে আমি অবসরে যাই। কি কারনে আমাকে মামলায় জড়ানো হয়েছে সেটা তারাই বলতে পারবে। আমি কোনো রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নই। মৃত দুলাল হোসেনের ছেলে সাজু বলেন,গত ৫ জানুয়ারী আমার বাবা মারা যান। তিনিতো এখন বেঁচে নেই। একজন মৃত ব্যক্তিকে কেন আসামী করা হয়েছে সেটি বলতে পারবো না। মামলায় ২৮ নম্বর আসামী করা হয়েছে ডোমার সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক মোঃ আইনুল হককে। তিনি বলেন, জামায়াত নেতা বক্করের সাথে আমার জমি নিয়ে দ্ব›দ্ব রয়েছে। বিষয়টি আমি জেলা আমিরসহ স্থানীয় জামায়াত নেতাদেরও অবগত করেছি। এখন দেখছি আওয়ায়ামী লীগ বিরুদ্ধে যে মামলা করা হয়েছে সেখানে আমার নাম রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, এজাহারের ৭৩ নম্বর আসামি দুলাল হোসেন উপজেলার সদর ইউনিয়নের পাগলা বাজার এলাকায় তার বাড়ী। তিনি মারা যান ২০২৪ সালের ৫ জানুয়ারী।
এ বিষয়ে মামলার বাদী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারী হাফেজ আব্দুল হক ফোন দিয়ে মৃত ব্যক্তি আসামী হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি ব্যস্ত রয়েছি পরে এই বিষয়ে কথা বলবো বলে ফোন কেটে দেন।
ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃআরিফুল ইসলাম মামলার বিষয়টি নিস্চিত করে বলেন, মামলার কোন আসামী যদি মারা যায় সেটি তদন্ত পুর্বক নাম বাদ যাবে।