জামালপুর প্রতিনিধি
নগদ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণের গহনাসহ স্ত্রী মনেকা বেগমকে ফিরে পেতে প্রবাসী স্বামী জাকিরুল ইসলাম বিভিন্নজনের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
গত এক মাস ধরে স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে মেলান্দহ থানায় করেছেন সাধারণ ডায়েরি।
আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে প্রেসক্লাব জামালপুরের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে স্ত্রীর সন্ধান চেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে কেঁদে আকুতি জানালেন মাদারগঞ্জ উপজেলার চর গুজামানিকা গ্রামের বাসিন্দা জাকিরুল।
জানা গেছে, জাকিরুল ইসলাম জীবিকা ও ভাগ্য পরিবর্তনের আশায় দীর্ঘ ২০ বছর সৌদি আরবে থাকার পর দেশে ফিরে আসেন। ২০০৪ সালে সৌদি আরবের জেদ্দায় একটি পাওয়ার প্লানে মেকানিং হিসাবে কাজ করে ২০ বছর প্রবাস জীবন শেষ গত গত ৬ মার্চ ফিরে আসেন। এরপর তিন মাস আগে মেলান্দহ উপজেলার মালঞ্চ গ্রামের মনেকা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধে আবদ্ধ হন। কিন্তু বিধি বাম। বিয়ের তিন মাস যেতে না যেতেই টাকা ও স্বর্ণ নিয়ে উধাও হোন স্ত্রী মনেকা আক্তার। এরপর থেকে জাকিরুল শশুরবাড়িসহ আত্মীয়-স্বজনদের বাড়ি বাড়ি স্ত্রী মনেকাকে খুঁজতে খুঁজতে পাগল প্রায়। সবার কাছেই সেই স্ত্রীর সন্ধান চেয়ে আকুতি জানিয়েছেন। কিন্তু তার কোন খোজ মিলছে না। এরপরও সে স্ত্রীর আশা ছাড়েনি। স্ত্রীকে সারাদিনই খুজে বেড়াচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম।
কান্না জড়িত কণ্ঠে জাকিরুল বলেন, গত ৫ জুন দেশে ফিরে দেড়মাস পরে মেলান্দহের মালঞ্চ পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত নূরুল ইসলামের মেয়ে মনেকা আক্তারের সাথে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাদের সংসার ভালোই চলছিল কিন্তু স্ত্রীর বড় বোন নূরেজা এবং শাশুড়ি মমতা বেগমের কুপ্ররোচনার ফাদে পা দেয় মনেকা। এ অবস্থা স্বামীর বাড়ি থেকে মার্কেট করার কথা বলে গত ৩০ সেপ্টেম্বর নগদ ৫ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ নিয়ে কৌশলে পালিয়ে যায়। পরে শশুড়বাড়িতে স্ত্রীর খোঁজ নিতে গেলে তারা পাল্টা অভিযোগ করে জাকিরুলকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
এ সময় কান্না জড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার শাশুড়ির প্ররোচনায় শ্বশুরবাড়ির লোকজন আমার স্ত্রী মনেকাকে লুকিয়ে রেখে নগদ ৫ লাখ টাকা ও ১০ ভরি স্বর্ণ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য এ পরিকল্পনা করছে। তারা আমাকে হুমকি দেয়ার পর মেলান্দহ থানায় একটি জিডি করি। এছাড়া আমি জানতে পেরেছি মনেকা আক্তারের আগেও বিয়ে হয়েছিলো। সেখানেও এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এখন আমি আমার স্ত্রীর সন্ধান চাই। কারণ গত ২০ বছর বিদেশ থেকে যা আয় করেছি সবই নিয়ে পালিয়ে গেছে। এখন আমার আর কিছুই নেই। এ বিষয়ে থানায় একটি প্রতারণার মামলা করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।
তিনি স্ত্রীকে আবারো ফিরিয়ে নেবেন কি-না এমন প্রশ্নের জবাবে জাকিরুল বলেন, আমার যা যাবার সবই গেছে। তাতে কোন সমস্যা নেই। আমি আর দেশের বাইরে যাবো না। স্ত্রীকে নিয়ে আবারো নতুন করে ঘর বাঁধবো। স্ত্রীকে ফিরে পেলে আমার কোন কিছুরই দরকার নেই।
এ বিষয়ে মনেকার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা মনেকার কোন খবর জানেন না বলে জানান। মনেকার বোড় বোন নুরেজার দাবি, তার বোন জামাই বাড়ি থেকে হারিয়েছে। আমরা এর কিছুই জানি না।
তবে জাকিরুল বলছে অন্য কথা, তার বড় বোন নূরেজা ওকে সরিয়ে রেখেছে। খোদেজা নামের মনেকার এক চাচাতো বোন জানিয়েছে সে নারায়নগঞ্জে আছে তার বড় বোনের সাথে। আমি আমার স্ত্রীকে ফেরত চাই।