মাহবুবুর রহমান জিলানী, গাজীপুর
ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক টঙ্গী কলেজ গেইট শাখায় আমানতকারীদের কোটি টাকা জমা থাকলেও পাঁচ হাজার টাকার বেশি দেওয়া হচ্ছেনা। শত শত গ্রাহক নিজ এ্যাকাউন্টের জমানো টাকা তুলতে এসে না পাওয়ায় চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়। গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় ব্যাংকটির কলেজ গেইট শাখায় গিয়ে এই চিত্র দেখা গেছে।
উক্ত শাখার গ্রাহক মিনহাজ কবির বলেন, “আমার বাড়ি নির্মাণের জন্য সব টাকা এই ব্যাংকে জমা রেখেছি। এখন টাকা তুলতে এসে কয়েক দিন ধরে ঘুরতেছি কিন্তু টাকা তুলতে পারছিনা। কোটি টাকা জমা থাকলেও নাকি ৫ হাজার টাকার অধিক দেয়া যাবেনা বলে ব্যাংক সাফ আমাকে জানিয়ে দিয়েছে।”
নাম প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক একজন মহিলা গ্রাহক বলেন, “গত কয়েক দিনে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা করে তুলে জমানো দশ লাখ টাকা থেকে মাত্র পঞ্চাশ হাজার টাকা তুলতে পেরেছি। ব্যবসায়িক কাজে আমার দশ লাখ টাকাই প্রয়োজন। এখন কি করবো বুঝে উঠতে পারছিনা।”
টাকা তুলতে আসা আরেক গ্রাহক বলেন, ” আমি একটি জমি রেজিষ্ট্রেশন করার কথা আগামী রোববার। ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের এই শাখায় আমার সাড়ে চার লাখ টাকা জমা আছে। কিন্তু এখন টাকা তুলতে পারছিনা। জমি বিক্রেতার একাউন্ট পূবালী ব্যাংকে। সেই এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠাতে চাইলে বলছে অন্য ব্যাংকে টাকা ট্রান্সফার এখন বন্ধ আছে। ব্যাংকে টাকা রেখে যদি এরকম বিপদে পড়ি আমরা কোথায় যাবো বলেন।”
এসময় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক টঙ্গী কলেজ গেইট শাখার ম্যানেজার তাঁর কক্ষে উপস্থিত ছিলেন না। একজন কর্মকর্তা জানালেন, ম্যানেজার সাহেব বিশেষ প্রয়োজনে বাহিরে গেছেন। এ সময় উপস্থিত ম্যানেজার অপারেশন মোহাম্মদ শওকত হোসেনকে ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের তোপের মুখে পড়তে দেখা যায়।
৫ হাজার টাকার বেশি কেন দেয়া হচ্ছেনা? জানতে চাইলে উক্ত ব্যাংক শাখার ম্যানেজার অপারেশন শাখাওয়াত হোসেন এই প্রতিনিধিকে বলেন, “আমাদের এই শাখায় দৈনিক যেখানে এক থেকে দুই কোটি টাকা লেনদেন হয় সেখানে আমরা এখন দৈনিক মাত্র আট থেকে দশ লাখ টাকা দিতে পারছি। আমাদের নগদ টাকা এর চেয়ে বেশি থাকেনা। তিনি বলেন, এস আলম গ্রুপের সব ব্যাংকের সকল শাখাতেই একই অবস্থা। আমাদের কিছু করার নেই। নতুন পরিচালনা পরিষদ সেটাপ চলছে। সেটাপ হলে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক সিদ্ধান্ত দিলে চলতি মাসের শেষ বা আগামী মাসের প্রথম দিকে এই সমস্যা দূর হতে পারে বলে তিনি জানান।”
এ ব্যাপারে জানার জন্য শাখা ম্যানেজার মো. আবু সাইদ এর মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।